ইফতারের জন্য সহজ ও মুখরোচক ৫টি রেসিপি 2025

Author admin
March 31, 2024


ইফতার মানেই সুস্বাদু খাবারের সমাহার। কিন্তু প্রতিদিন একঘেয়েমি খাবার খেতে কারও ভালো লাগে না। তাই আজ নিয়ে এসেছি ৫টি মুখরোচক রেসিপি, যা তৈরি করাও সহজ এবং খেতেও হবে অসাধারণ!

১. ঝটপট বেগুনি – বেগুনের স্বর্গীয় রূপ



বেগুনি ছাড়া ইফতার যেন অসম্পূর্ণ! কিন্তু অনেক সময় বেগুনি খেতে নরম হয়ে যায় বা বেশি তেল শুষে নেয়। তাই পারফেক্ট বেগুনি তৈরির জন্য কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।

প্রথমেই বেগুন মাঝারি আকারে পাতলা করে কাটতে হবে। খুব মোটা হলে ভেতরটা কাঁচা থেকে যাবে, আর বেশি পাতলা হলে ভালোভাবে লেপে আসবে না। এরপর বেসনের ব্যাটার তৈরি করতে হবে। ব্যাটার হতে হবে এমনভাবে, যা বেগুনের গায়ে ভালোভাবে লেগে থাকবে, কিন্তু বেশি ভারী হবে না। চাইলে সামান্য চালের গুঁড়া বা কর্নফ্লাওয়ার মেশানো যায়, যা বেগুনিকে অতিরিক্ত মচমচে করবে।

আরেকটি ট্রিক হলো, ভাজার সময় মাঝারি আঁচ বজায় রাখা। বেশি গরম তেলে দিলে বাইরের অংশ পুড়ে যেতে পারে, আবার কম গরম তেলে দিলে বেগুনি বেশি তেল শুষে নেবে। তাই ভাজার সময় তাপমাত্রার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বেগুনি গরম গরম পরিবেশন করাই ভালো, কারণ ঠান্ডা হলে মচমচে ভাব নষ্ট হয়ে যায়। সঙ্গে টমেটো সস বা ধনিয়া চাটনি হলে তো কথাই নেই!

২. ক্রিস্পি আলুর চপ – আলুর বিস্ফোরণ



আলুর চপ ইফতারে অনেকেরই পছন্দের আইটেম। কিন্তু অনেক সময় এটি খেতে বেশি নরম হয়ে যায় বা বাইরের অংশ ঠিকমতো ক্রিস্পি হয় না। তাই সঠিক পদ্ধতিতে বানালে আলুর চপ পারফেক্ট হবে।

প্রথমে আলু ভালোভাবে সেদ্ধ করতে হবে। তবে অতিরিক্ত সেদ্ধ করলে চপ বেশি নরম হয়ে যেতে পারে, তাই খেয়াল রাখতে হবে যেন এটি মসৃণভাবে চটকে নেওয়া যায়। এরপর এতে প্রয়োজনীয় মশলা, যেমন—লবণ, ধনে গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, লাল মরিচ ও চাট মসলা মেশাতে হবে। চাইলে সামান্য পেঁয়াজ কুঁচি, ধনেপাতা ও কাঁচা মরিচও দেওয়া যায়, যা স্বাদ আরও বাড়াবে।

বাইরের অংশ মচমচে করার জন্য ব্রেডক্রাম্ব ব্যবহার করতে হবে। প্রথমে চপের বল বানিয়ে একবার কর্নফ্লাওয়ার বা ময়দার ব্যাটারে চুবিয়ে নিতে হবে, তারপর ব্রেডক্রাম্বে গড়িয়ে নিতে হবে। চাইলে এই কোটিং দুইবার করতে পারেন, এতে বাইরের লেয়ার বেশি ক্রিস্পি হবে। গরম তেলে ভাজার সময় মাঝারি আঁচে রাখতে হবে, যাতে বাইরের অংশ সুন্দরভাবে ভাজা হয়।

পরিবেশন করার সময় গরম গরম চাট মসলা ছিটিয়ে দিন। সঙ্গে যদি একটু ধনিয়া-পুদিনার চাটনি থাকে, তাহলে ইফতারের মজাই দ্বিগুণ হয়ে যাবে!

৩. ডাল পুরি – মচমচে স্বাদের রাজা



ইফতারে ডাল পুরি হলে জমে যায়! কিন্তু অনেকেই ঠিকঠাক বানাতে পারেন না। ডাল পুরি খেতে মচমচে করতে হলে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

প্রথমে মসুর ডাল সেদ্ধ করে ভালোভাবে বেটে নিতে হবে, যাতে কোনো দানা না থাকে। এরপর এতে পেঁয়াজ কুঁচি, ধনে গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, লবণ ও সামান্য তেল মিশিয়ে পুর তৈরি করতে হবে। পরোটা বানানোর মতো করে ছোট ছোট রুটি বেলে মাঝখানে পুর দিতে হবে। এরপর দুই পাশ ভালোভাবে সিল করে রোল বানিয়ে নিতে হবে।

পুরিগুলো ভাজার সময় গরম তেল ব্যবহার করতে হবে এবং মাঝারি আঁচে ভাজতে হবে, যাতে ভালোভাবে ভেতর থেকে সেদ্ধ হয় এবং বাইরের অংশটা মচমচে থাকে। চাইলে এতে সামান্য ঘি মিশিয়ে ভাজতে পারেন, যা স্বাদ আরও বাড়িয়ে দেবে।

টমেটো সস বা চাটনি দিয়ে পরিবেশন করলে এর স্বাদ আরও বেড়ে যাবে।

৪. চিকেন নাগেটস – কুড়মুড়ে স্বাদের বিস্ময়



ইফতারে চিকেন নাগেটস হলে বাচ্চাদেরও আনন্দ হয়! কিন্তু বাড়িতে দোকানের মতো মচমচে নাগেটস বানানো কঠিন মনে হতে পারে। তবে সঠিক উপায়ে বানালে খুব সহজেই রেস্টুরেন্ট স্টাইলে তৈরি করা সম্ভব।

প্রথমে মুরগির মাংস ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এতে সামান্য রসুন বাটা, আদা বাটা, গোলমরিচ গুঁড়া ও লবণ মেশাতে হবে। এরপর ভালোভাবে মেখে ছোট ছোট শেপ তৈরি করে নিতে হবে। এরপর ডিম ও ব্রেডক্রাম্ব দিয়ে কোটিং করতে হবে। চাইলে কর্নফ্লেক্স গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন, যা নাগেটসকে আরও বেশি মচমচে করবে।

ভাজার সময় নাগেটসগুলো মাঝারি আঁচে রাখতে হবে, যাতে বাইরের অংশ ভালোভাবে ভাজা হয় এবং ভেতরের অংশ কাঁচা না থাকে। একবার ভেজে ফ্রিজে রেখে দিলে ইফতারের আগে আবার হালকা ভেজে নিলেই হবে।

সস বা মেওনেজ দিয়ে পরিবেশন করলে চিকেন নাগেটসের স্বাদ একেবারে অন্য লেভেলে চলে যাবে!

৫. ছোলা চাট – স্বাদের দারুণ বিস্ফোরণ



ইফতারের অন্যতম জনপ্রিয় আইটেম হলো ছোলা চাট। কিন্তু অনেকেই এটি ঠিকঠাক বানাতে পারেন না, ফলে স্বাদ ঠিকমতো আসে না। পারফেক্ট ছোলা চাট বানাতে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

প্রথমে ছোলা ভালোভাবে সেদ্ধ করতে হবে। বেশি কাঁচা রাখলে খেতে কষ্ট হবে, আর বেশি সেদ্ধ করলে গলে যাবে। তাই মাঝামাঝি সেদ্ধ করা সবচেয়ে ভালো। এরপর এতে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতা কুচি, টমেটো ও সামান্য আদা কুঁচি মেশাতে হবে।

স্বাদের জন্য চাট মসলা, বিট লবণ ও লেবুর রস দিতে হবে। চাইলে এতে সামান্য ইমলি বা টক চাটনিও মেশানো যায়, যা স্বাদ আরও বাড়িয়ে দেবে। চাইলে ভাজা চানা বা মুড়িও মেশানো যায়, যা খেতে আরও মজাদার করবে।

সবশেষে উপরে সামান্য ঝুরিভাজা বা পেঁয়াজ বেরেস্তা ছিটিয়ে পরিবেশন করুন। এতে করে স্বাদ হবে একেবারে পারফেক্ট!

শেষ কথা



ইফতারের সময় ঝামেলা না করে সহজ কিন্তু সুস্বাদু খাবার তৈরি করাই বুদ্ধিমানের কাজ। এই ৫টি রেসিপি এমন, যা বানাতে খুব বেশি সময় লাগবে না, কিন্তু খেতে হবে একেবারে অসাধারণ! তাই আজই ট্রাই করে দেখুন এবং ইফতারকে আরও মজাদার করে তুলুন!

TAGGED:

You May Like

no blog No Comment Found